ক্যামেরা নিষিদ্ধ পারমাদন অভয়ারণ্যে
ক্যামেরা নিয়ে চিত্রগ্রাহকদের উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার পারমাদন অভয়ারণ্যে প্রবেশের ওপর আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করল বন দপ্তর। বিদেশি পাখির প্রজননে যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে, সেজন্যই এই ব্যবস্থা বলে জানা গেছে। রাজ্যের মধ্যে অন্যতম অভয়ারণ্য বাগদার পারমাদন। আসল নাম বিভুতিভূষণ অভয়ারণ্য। এখানকার জালঘেরা এলাকায় হরিণ-সহ বেশ কিছু পশুর পাশাপাশি মুক্ত বনাঞ্চলে দেশ-বিদেশের বহু পাখি আশ্রয় নেয়। জানা গেছে, প্রায় ৮ বছর পর গত বছর মাত্র হাতে গোনা দু-একটি 'হুডেড পিট্টা' নামের বিদেশি পাখি এই অভয়ারণ্যের গাছে আশ্রয় নেয়। এ বছর সেই সংখ্যা বেশ কয়েকটি বেড়েছে।
মূলত মায়ানমার, সুমাত্রা ইত্যাদি দেশের এই পাখি কোনও কারমে সেখান থেকে এই রাজ্যের পারমাদন অভয়ারণ্যে আশ্রয় নিচ্ছে। এই সময়টা তাদের প্রজননের ঋতু। পারমাদন অভয়ারণ্যকে নিরাপদ এবং নির্জন এলাকা হিসেবে বেছে নিয়ে ওই পাখিরা এখানেই আশ্রয় তৈরি করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি শুরু হয়েছে। অভিযোগ, কলকাতা এবং আশপাশের এলাকা থেকে এক শ্রেণির চিত্রগ্রাহক এই পাখির ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা হাতে ঢুকে পড়ছেন এই অভয়ারণ্যে। এরপর রেকর্ডিং করা ওই পাখির নানা ডাকের শব্দ বাজিয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। এতে পাখিরা আকৃষ্ট হবার পরিবর্তে বিরক্ত বোধ করছে।
এই চিত্রগ্রাহকেরা এই বিরল প্রজাতির পাখির ছবি তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ায় দলে দলে চিত্রগ্রাহক এই পাখির ছবি তোলার জন্য অভযারণ্যে হাজির হচ্ছেন। তাতে আরও বেশি বিরক্ত হচ্ছে এইসব পাখিরা। পক্ষীপ্রেমীদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে হুডেড পিট্টা পারমাদন, এমনকি এই রাজ্য থেকে ফের অন্যত্র চলে যাবে। এই কারণে অভয়ারণ্য কর্তৃপক্ষ চিত্রগ্রাহকদের অত্যাচার বন্ধ করতে, বিশেষত জুন থেকে আগষ্ট পর্যন্ত জঙ্গলে প্রবেশাধিকার বন্ধ করার জন্য রাজ্য বন দপ্তরের কাছে দাবি জানান।
এই বিষয়টিকে সমর্থন জানিয়ে চিত্রগ্রাহক অঞ্জন বিশ্বাস জানান, 'একশ্রেণির চিত্রগ্রাহক অবিবেচকের মতো কাজ করার কারণে পারমাদন অভয়ারণ্যে হুডেড পিট্টারা বিব্রত বোধ করছে। এটি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত্।' পক্ষীপ্রেমীদের এই দাবি মেনে দিন কয়েক আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনাধিকারিক মানিকলাল সরকার এক নির্দেশিকা জারি করে আপাতত পারমাদন অভয়ারন্যে ক্যামেরা নিয়ে চিত্রগ্রাহককে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন বলে বন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
No comments:
Post a Comment